দিনাজপুর জেলার ঘোড়াঘাট,করতোয়া নদীর তীরে রাজার বিশাল অশ্বারোহী বাহিনীর অশ্বশালা ছিল। এই সকল অশ্বকে করতোয়া নদীতে স্নান ও পানি পান করানো হত। ফলে স্থানটির নাম কালক্রমে ঘোড়াঘাট হয়। চির প্রবাহমান করতোয়া নদীর তীরে সবুজ গাছপালায় ঢাকা, সবুজে ঘেরা, স্নীগ্ধ জনমুখর এবং ঐতিহাসিক ক্ষ্যাত এক জনপদের নাম ঘোড়াঘাট। বৃটিশ আমলে ১৭৯৩ সালে ঘোড়াঘাট থানা প্রতিষ্ঠিত হয়। ১৭৬৫ সালের পূর্বে ঘোড়াঘাটের একটি উজ্বল অতীত ছিল। গৌরব যুগের ঘোড়াঘাট ছিল ১০ মাইল লম্বা ২ মাইল চওড়া। কথায় আছে একান্ন পট্টি বাহান্ন গলির শহর ছিল ঘোড়াঘাট। মধ্য যুগের বাংলার গৌরবময় ইতিহাস প্রসিদ্ধ ঘোড়াঘাট দূর্গ আর নেই তবে আজও পড়ে আছে জীর্ন ধ্বংসাবশেষ,আছে অনুসন্ধান,আছে সংগ্রহ ও সংকলন। পলাশীর যুদ্ধের আট বছর পর ১৭৬৫ সালে ইংরেজ সেনাপতীর দ্বারা ঘোড়াঘাট বিজয়ী হওয়ার পর কোন এক সময়ে ঘোড়াঘাটের পতন শুরু হয়।১৭৬৫ সালের পূর্বে কখনও সরকার পরিচালনার কেন্দ্র হিসেবে কখনও জেলা হিসেবে পরিচিত হয়েছে ঘোড়াঘাট।ঘোড়াঘাট নামটি প্রথম পাওয়া যায় মাহমুদ শাহী বংশের সুলতান রকন উদ্দিন বরবক শাহ এর আমলে(১৪৫৯-৭৬ খ্রী:) আইন-ই আকবরিতে ঘোড়াঘাটের নামটি বার বার উল্লেখিত হয়েছে। মধ্যযুগের প্রসিদ্ধ কবি হায়াত মাহমুদের পুথিতে ঘোড়াঘাটের নামটি ব্যবহৃত হয়েছে। ঘোড়াঘাটের প্রতিটি ধুলিকনায় মিশে আছে জানা অজানা ইতিহাসের অনেক মূল্যবান তথ্য।ঘোড়াঘাট পৌরসভায় দর্শনীয় স্থান সমূহের মধ্যে সাহেবগঞ্জ মৌজার করোতোয়া নদীর তীর ঘেষে জরাজীর্নভাবে দাড়িয়ে আছে সময়ের বিশালতায় ও দৃঢ়তায় মধ্যযুগের বাংলার শ্রেষ্ট ও বৃহত্তম ঘোড়াঘাট দূর্গ। গৌড়ীয় সুলতান বরবক শাহের সেনাপতি ইসমাইল গাজীর নেতৃত্বে আত্রাই নদীর তীরবর্তী মাহিসন্তোষ নামক স্থানে কামতারাজের সঙ্গে তুমুল যুদ্ধ হয় এবং পরে কামতাপুর দুর্গ (দিনাজপুরের ঘোড়াঘাটে) বিজীত হয়। ঘোড়াঘাটে করতোয়া নদীর পশ্চিমতীরে ইসমাইল গাজী এক মুসলিম নগরীর গোড়াপত্তন করেন। পরবর্তী কালে ইহা বিখ্যাত ঘোড়াঘাট সরকার নামে পরিচিত হয়। জিন্দাপীর নামে অভিহিত ইসমাইল গাজী ও বহু আউলিয়ার মাজার ঘোড়াঘাটে বিদ্যমান। ঘোড়াঘাট দূর্গের মধ্যে রয়েছে হোসেন শাহি মসজিদ নামে পরিচিত ধ্বংসপ্রাপ্ত একটি শাহী মসজিদ, আরও রয়েছে ঘোড়াঘাট খ্যাত পাঁচটি পীরের মাজার ১। দরিয়া-ই বুখারী (র:)মাজার ২। শাহ ইসমাইল গাজী (র:) মাজার ৩। খন্দকার বদরে আরেফিন (র:)মাজার ৪। নুরুদ্দীন(র:) মাজার৫। কাজী সদরউদ্দীন(র:) মাজার আরও রয়েছে সবুজ গাছপালায় ঘেরা ছায়া ঢাকা শান্ত স্নীগ্ধ বিশাল আকারের লালদহ বিল। এক সময়ের উত্তর বঙ্গের প্রধান শক্তি কেন্দ্র ঘোড়াঘাটের হারিয়ে যাওয়া গৌরব ফিরিয়ে আনার প্রয়াস নিয়ে ঘোড়াঘাট পৌরসভা গঠিত হয় ২০০৫ সালের ১৬ইএপ্রিল। ধীর গতিতে হলেও ২০১১ সালে নব নর্বাচিত তরুন মেয়র ও কাউন্সিলরগন কল্যানকর ও শান্তিপূর্ন কার্যকর ব্যবস্থার মাধ্যমে সম্ভাবনাময় এক সম্বৃদ্ধির উজ্বল ব্যবস্থার দিকে এগিয়ে নিয়ে যাচ্ছে। নব উদ্যমে ঘোড়াঘাটের ড্রেনেজ ব্যাবস্থা,লাইটিং, ও উন্নয়ন মূলক আধুনিক ব্যবস্থা সমূহের মধ্যে কৃষি,সেচ,আর্থ সামাজিক অবকাঠামো স্বাস্থ্য শিক্ষা সমাজ কল্যান,ক্রিড়া ও সাংষ্কৃতিক উন্নয়ন রয়েছে।

পঞ্চগড় পৌরসভার ভবিষ্যৎ পরিকল্পনার মধ্যে ক) পৌরসভার সীমানা বর্ধিত করণ, খ) ক শ্রেণীর পৌরসভা হিসেবে ক টাইপ পৌরসভার বর্ধিত ভবন নির্মাণ, গ) একটি পৌর মার্কেট স্থাপন, ঘ) একটি নিজস্ব অডিটোরিয়াম কাম মিলনায়তন, ঙ) পর্যটকদের জন্য একটি উন্নতমানের রেস্ট হাউজ নির্মাণ, চ) পৌর মেয়রের ব্যবহারের জন্য একটি উন্নতমানের জীপ গাড়ি ক্রয়, বিশুদ্ধ পানি সরবরাহের জন্য ওভারহেড ট্যাংকসহ পানির লাইন সংম্প্রসারণ ইত্যাদি, ইত্যাদি।